গ্রাম ও জাতি বিবরণ – পূর্ব্বে কথিত হইয়াছে যে, গ্রাম অর্থে আদি স্বর ষড়জের ওজন অর্থাৎ সুর। সেই শুরটা বড়জ, ঋষভ, গান্ধারাদি সপ্ত শুয়ে পরিণত হইয়া সাতটা গ্রাম গঠিত হইয়াছে। অঙ্কিত শ্রৌতিক গ্রাম দর্শনেও স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, বড়জকে গ্রামের মধ্যে রাখিতে গেলে, একটা প্রকৃত ও ছয়টা বিকৃত এই সাজ্জী গ্রাম ভিন্ন অপর কোন গ্রামেই স্বরদিগের শ্রুতিগত পরিমাণ ও বিশুদ্ধতা রক্ষিত হয় না। সুতরাং ঐ সপ্ত গ্রামই শুদ্ধ ও সহজ; কিন্তু ইহা ভিন্ন মানবের বুদ্ধি-প্রস্থত বহুবিধ বিকৃত গ্রামও ব্যবহার হইয়া থাকে। ফল হৃদয়োখিত স্বয়ঙ্কু রাগ রাগিণীগুলি বোধ হয় ঐ সপ্ত গ্রামেই প্রকাশিত হইয়াছিল।
গ্রাম ও জাতি বিবরণ
কেননা যখন কোন ব্যক্তি হর্ষ বিষাদাদি রসে বিমোহিত ও আত্মহারা হইয়া ক্রন্দন বা সঙ্গীতরূপে মনোভাব প্রকাশ করিতে জর্দয় খুলিয়া দেয়, তখন বুদ্ধি বিবেচনাদি কোন চাতুর্য্যই সেখানে স্থান প্রাপ্ত হয় না। তখন যাহা সহজ ও ঈশ্বরানুমোদিত, তাহাই কেবল অভ্রান্ত- রূপে অনুষ্ঠিত হইতে থাকে। ব্যবহারেও দেখা যায় যে, ঐ সহজ সপ্ত গ্রামে যে সকল রাগ রাগিণী গীত হয়, তাহা স্বভাবতই মিষ্ট ও হৃদয়গ্রাহী; এবং বিবিধ বিকৃত সুর- যোগে গঠিত হইলেও ঐ কয়টা গ্রামের সুর সহজেই মনুষ্য-কণ্ঠে প্রকাশ পাইয়া থাকে। আবার সঙ্গীত-সংসারে ঐ কয়টী জাতীয় রাগেরু সংখ্যাই অধিক; সুতরাং ঐ সপ্ত গ্রামই শুদ্ধ ও সহজ।
এক্ষণে ঐ সাতটী গ্রামের আভ্যন্তরিক সংস্থান অর্থাৎ প্রকৃত ও বিকৃত সুর-নিচয় কিরূপ পরিমাণ প্রাপ্ত হইলে প্রত্যেক গ্রামে সুরগুলির প্রাকৃতিক অনুপাত সুরক্ষিত হয়, নিয়ে যথাক্রমে তাহা লিখিত হইতেছে। বলা বাহুল্য যে, স্বরদিগের প্রাকৃতিক সংস্থানই শুদ্ধ, সহজ ও মিষ্টতার এক মাত্র নিদান।-
ষড়জ ঋষভাদি সপ্ত স্বরের সপ্ত গ্রাম বা ঠাট যাহা প্রদর্শিত হইবে, উহাদিগকে এক এন্ট্রী জাতিও বলা যাইতে পারে। কেননা স্বস্ব জাতীয় প্রত্যেক রাগই স্ব স্ব গ্রামগত একই পরিমিত নির্দিষ্ট সুরে বাদিত হইবে। ইহার ব্যভিচার হইলে সুরগুলির অযথা সংস্থানে রাগ অশুদ্ধ হইবে; সুতরাং যভুজ গ্রানে যে সকল রাগ গাঁত হয়, তাহা ষড়জ জাতীয়, ঋষভ গ্রামে বাহা গীত হয়, তাহা ঋষভ জাতীয় ইত্যাদি। এই রূপ সপ্ত গ্রামে সপ্ত জাতীয় রাগ অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে।
আরও পড়ুনঃ