সপ্ত গ্রাম সংস্থান | বেহালা-দর্পণ ও গণিত-সঙ্গীত

সপ্ত গ্রাম সংস্থান – অধুনা এতদ্দেশে দিন দিন জাতীয় সঙ্গীতের আদর বৃদ্ধি হইতেছে। কণ্ঠ ও যন্ত্র সঙ্গীত শিক্ষাবিধায়ক বিবিধ পুস্তক প্রণীত ও প্রচার বাহুল্যই তাহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। স্বর-লিপির উপকারিতা বিষয়ে সাধারণের এরূপ শুভ সম্মতি নিতান্ত সুখের রিষয়।

বস্তুত, যে বিদ্যা বর্তমানে লিপিবদ্ধ হইয়া ভবিষ্যৎ জনগণের কর্ণ কুহরে মন্ত্র প্রদান না করে, সে বিদ্যার উন্নতি ও শিক্ষা-পথ অত্যন্ত জটীল ও জঞ্জালপূর্ণ। কিন্তু ধ্বংশ-পথ অতি প্রশস্ত। একটা রাজ-বিপ্লব অথবা দেশব্যাপী মহামারী সংক্রমণে তাহা অনন্ত কাল- গর্ভে বিলীন হয়। এই জন্য, লিপিগত বিদ্যার আদর দেখিলে মনে প্রকৃতই আশার সঞ্চার হয়।

ভারতীয় সঙ্গীত-বিদ্যা-বিশারদ রাজ শ্রীযুক্ত শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুর বাহাদুরের বীজ বপনে এক্ষণে সেই আশালতা সুফল প্রদান করিতেছে। পুরাতন গৎ, গান, আলাপ ও নূতন উচ্ছ্বাস সকল লিপিবদ্ধ হইয়া, সাধারণের নয়ন সম্মুখে উপনীত ও সাদরে গৃহীত হইতেছে। সুতরাং শিক্ষা-স্রোত যে একটু গতিশীল হইয়াছে, তাহা স্পষ্টই অনুভূত হয়।

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

ষড়জ বা প্রকৃত গ্রাম

এই গ্রামে বড়জ, নিজ স্থানে থাকিয়া গ্রাম পূর্ণ করিয়াছে; সুতরাং ষড়জই ই হার স্থর ও ইহার সমস্ত দুরই প্রকৃত। এই প্রকৃত ঠাটে যে যে রাগ গীত হইবে তাহারা ষড়ঙ্গ জাতীয় রাগ বলিয়া গণ্য; যথা-

আলেয়া জাতীয় প্রকৃত ঠাট

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

ঋষভ গ্রাম

এই গ্রামে ষড়ঙ্গ, ঋষভ রূপে পরিণত হইয়া গ্রাম পূর্ণ করিয়াছে; অতএব অতি কোষল নিয়াদ ইভার হুয়। এই ঠাটে যে যে রাগ অনুষ্ঠিত হয়, তাহারা ঋষভ জাতীয় রাগ বলিরা কথিত; যথা-

সিন্ধু জাতীয় ঠাট

 

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

গান্ধার গ্রাম

ইহাতে বড়জ, গান্ধার রূপে পরিণত হইয়া গ্রাম সংস্থান করিয়াছে; অতএব মধ্য কোমল ধৈবত ইহার সুর। এই গ্রামে যে যে রাগ রাগিণী গীত হয়, তাহারা গান্ধার জাতীয় রাগ বলিরা বিশেষিত; যথা-

ভৈরবী জাতীয় ঠাট

 

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

——————————————————————————————-

সপ্ত গ্রামের মধ্যে প্রকৃত গ্রাম ভিন্ন, অপর ছয়টী বিকৃত গ্রামস্থ হরের পৃ্যতম অঙ্কগুলি পরিত্যক্ত হইয়াছে; তবে যে কৌতূহলী পাঠক ঐ পুর নিচরের পঞ্চমত্ব সম্বন্ধ গণনা দ্বারা বুঝিতে ইচ্ছা করিবেন, তিনি যেন শ্রুতিসমূহের অঙ্কগত হিসাবের তালিকা হইতে অঙ্কগুলি ঠিক করিয়া লন। ভগ্নাংশে দেখিভে বইলে, তাহাও ঐ তালিকা মধ্যে দেখিতে পাইবেন।

মধ্যম গ্রাম

ইহাতে ষড়জ, মধ্যম রূপে প্রকাশিত হইয়া গ্রাম গঠন করিয়াছে; সুতরাং পঞ্চম ইহার সুর। এই গ্রামস্থ যাবতীয় রাগই মধ্যমজাতীয় বলিয়া গণ্য। যথা-

ইমন জাতীয় ঠাট

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

পঞ্চম গ্রীষ্ম

ষড়জ, পঞ্চম রূপে পরিণত হইয়া এই গ্রাম পত্তন করিয়াছে; সুতরাং মধ্যম ইহার সুর। এই গ্রামে যে যে রাগ গীত হয়, তাহারা পঞ্চমজাতীয় বলিয়া অভিহিত; যথা-

ঝিঝিট জাতীয় ঠাট

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

ধৈবত গ্রাম

এই ঠাটে ষড়জ, ধৈষত রূপে পরিণত হইয়া গ্রাম গঠন করিয়াছে; অতএব অতি কোমল গান্ধার ইহার সুর। এই গ্রামে যে সকল রাগ গীত হয়, তাহারা ধৈবত জাতি মন্ধ্যে গণ্য; যথা-

কানাড়া জাতীয় ঠাট

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

নিষাদ গ্রাম

ইহাতে ষড়জ, নিষাদ ভাবাপন্ন হইয়া গ্রাম গঠন করিয়াছে; সুতরাং মধ্য কোমল ঋষভ উহার সুর। এই ঠাটে যে যে রাগ গীত হয়, তাহারা নিষাদ জাতি মধ্যে পরিগণিত; যথা-

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

 

নিষাদ জাতীয় কোন রাগের সচরাচর ব্যবহার দেখা যায় না; এই জন্য ইহা কোন্ জাতীয় রাগ, তাহা লিখিত হইল না।

 

সপ্ত গ্রাম সংস্থান

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment