সঙ্গীতের মাত্রা ,লয়,তান,কর্ত্যব ও আরোহণ-অবরোহণ – কালের ধারাবাহিক স্রোতকে খণ্ডে খণ্ডে বিভাগ করার নাম মাত্রা। ঘটিকা- যন্ত্রের এক একটা টক্ টক্ শব্দ, অথবা ধমনীর এক একটা আঘাত, কিম্বা এক, দুই, তিন, চারি ইত্যাদি এক এক রাশি গণনার কাল এক মাত্রা জ্ঞাপক। আবশ্যক হইলে ঐ মাত্রা কাল, কিছু বিলম্বিত অথবা দ্রুততার সহিত সম্পন্ন হইয়াও থাকে।
সঙ্গীত- শাস্ত্রে পুত, দীর্ঘ, হ্রস্ব, অর্থ, অনু এই পাঁচ প্রকার মাত্রা ব্যবহৃত হয়। দুই মাত্রার অধিক হইলে তাহাকে প্লত; দুই মাত্রা হইলে দীর্ঘ এক মাত্রা হইলে হ্রস্ব; আধ মাত্রা হইলে অর্থ এবং সিকি মাত্রা হইলে অনুমাত্রা কহে। কিন্তু সঙ্গীতালোচনা কালে অনেক গুলে এরূপ দেখা যায় যে, অনু অপেক্ষাও অনেক লঘু,এমন কি, বোল অংশের এক অংশ অর্থাৎ এক আনা মাত্রাও আবশ্যক হয়।
সঙ্গীতের মাত্রা লয়, তান, কর্ত্যব ও আরোহণ-অবরোহণ
তান কর্ত্যবাদির সময় তাহার ব্যবহার হইয়া থাকে। আর এক প্রকার মাত্রা আছে, তাহাকে ভগ্ন অথবা আড়ি মাত্রা কহে। মুসলমান, সঙ্গীতকারগণ সর্ব্বদা ঐ আড়ি মাত্রা ব্যবহার করিয়া থাকেন। ইহা দ্বারা গান ও গতাদির সম, অতি সুন্দররূপে প্রকাশিত অর্থাৎ ছন্দগুলি যেন নৃত্য করিতে করিতে সমে আসিয়া পতিত হয়।
মাত্রার চিহ্ন
দৃষ্টান্ত
লয়
মাত্রা সমূহের সমকালিক গাতর নাম লয়। অন্তর মাত্রার আঘাত করিতে পারেন, তাঁহাদিগের সুতরাং যাহারা ঠিক সমান লময় লয় বোধ আছে বলিতে হইবে। লয় তিন প্রকার; যথা-বিলম্বিত, মধ্য ও দ্রুত। যে সকল গান বা গত ধীরতার সহিত গীত হয়, তাহাকে বিলম্বিত, মধ্যবিধ রকমে হইলে মধ্য এবং দ্রুততার সহিত হইলে দ্রুত লয় কহে।
তান
গমক মৃচ্ছ নাদি নানালঙ্কারে ভূষিত করিয়া রাগাদিকে বিস্তৃত করার নাম তান।
কর্ত্যব
গানাদি গাহিবার সময় সুরের বিবিধ প্রকার কৌশল দেখাইবার নাম কর্ত্যব।
আরোহণ অবরোহণ
ষড়জাদি হইতে ক্রমে চড়াম্বুরে উঠিবার নাম আরোহণ এবং চড়াশুর হইতে নিম্ন সুরে নামিবার নাম অবরোহণ। ইহাদিগকে যথাক্রমে, অনুলোম ও বিলোম কহিয়া থাকে।
আরও পড়ুনঃ
1 thought on “সঙ্গীতের মাত্রা, লয়, তান, কর্ত্যব ও আরোহণ-অবরোহণ | বেহালা-দর্পণ ও গণিত-সঙ্গীত”